Monday, 1 June 2020

দৈবযোগ


পার হলো শতবর্ষ,পার হয় শত স্মৃতি।
পার হয়ে দশ অব্দ,পারক ছিনালি হর্ষ।

শেষ হলো সব যাত্রা,শেষ হয় সব যুদ্ধ।
শেষ হয়ে সব শুরু,শেষের বৃষ্টি বার্তা।

জল বুঝায় জীবণ,জলে জল থৈ থৈ।
জলে ডুবায় জীবণ,জলের জলদি মরণ। 

আলোক সূর্য্য নিকট,আলোক তাপ প্রকট।
আলোক বর্ষ কত? আলোয় শব্দে বিকট।

অল্প শ্বাস অল্প আঁশ,অল্প অর্থে জীবণ বাস।
অল্প শোক অল্প সুখ,অল্পিষ্ঠ পাতায় ঘাস।

শাহারীয়ার ওয়াহেদ

Tuesday, 8 October 2013

বাংলাদেশ

লক্ষক্রোশ হেঁটে আসা জট পাকানো পা,
লুকোচুরি আর জন্মান্তরের খেলায় কোটি বাঙ্গালের মা,
পুরু লেন্সের চশমা চোখে অভিজ্ঞ বুড়ীর মত,
অপত্যস্নেহে গোর্কির মায়ের মত চোখ ভরা জলে যুদ্ধরত ।

পুষ্টিহীন শিশুগুলো বেড়ে ওঠে বলহীন পুরুষে,
লুটপাট,ধর্ষণে,দখলে,শত শত জারজ ঔরসে,
যা পায় তার সবই খায় নাহি থাকে জমা,
তোমার যোগ্য নই,চুপ থাকি,চাই শুধু ক্ষমা ।

সহস্র বছরের জন্ম-মৃত্যু,প্রেম-শাদী ঘিরে,
বুড়ী ঘুরে পদ্ধা,মেঘনা,যমুনায় নীল সাগর তীরে,
ঘুরে,ঘুরে হাটেঁ নিরবে,সহস্রাব্ধের স্মৃতিতে ডুবে,
কবে হবে জন্ম আবার ? কবে জন্মাবে নব দিনমণি পূবে ?

কালো-সাদা পোড়ার গল্প ঘুরে ঘুরে মুখে,
ভুলে গেছে জন্মের কথা,হয়ত কোন প্রাগৈতিহাসিক যুগে,
গৌড়,বঙ্গ,পুন্ড্র,হরিকেল,সমতট,বরেন্দ্র-এ,
জমা হয় যত ইতিহাস স্নায়ুরন্দ্র-এ ।

কখনো আর্য,মৌর্য,গুপ্ত,পাল,সেনের দখল,
কখনো পরাজিত প্রতাপশালী মোঘল,
আক্রমণ চালায় গ্রিক,শক,পহলব,কূষাণ,
বাংলার প্রেমে পড়ে তুর্কী,হাবসি,আফগান ।

কেহ নাম দেয় গঙ্গারিড়ই কারো মতে ইকতা,
কতশত রাজা হয় কতশত মুকতা,
হাজার মেহমান আসে কথা কয় হাজার সুর,
কত কেহ চিঠি লিখে প্রিয় বুলগাকপুর ।

 বাংলা হয় প্রথম স্বাধীন আবাদ,
সোনারগাঁও,সাতগাঁও,ফিরোজাবাদ,
ইলিয়াস শাহ দেয় শাহী মান,
ইলিয়াস শাহ ই স্বাধীন শাহ-ই-বাঙ্গালিয়ান ।

প্রস্তুত হয় তোমার সন্তানরা প্রাণ দিতে,
আফগান আসে,আর্য আসে মসনদ নিতে,
শুরু হয় লোভ,অবিশ্বাসের গান,
স্বাধীন তরবারি ঘুরায় বঙ্গশার্দূল ঈশাখান ।

বাংলার স্বাধীন নবাব সিরাজ,
জারজ রা সব বাংলা বিকে খোঁজে মিরাজ,
ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানী খোঁজে ক্ষমতার খণি,
পলাশীর প্রান্তে ডুবে যায় স্বাধীন দিনমণি ।

যাত্রা শুরু হয় সভ্যতা বদলের,
বাঙ্গালী ভাগ হয় বহুমতে বহু দলের,
ইংরেজের কূট চালে সংস্কৃতি মুছে যায়,
আজও বহু জারজ বাংলায় ঘুরে বেড়ায় ।

ওরা চলে যায় তোমায় বন্ধক রেখে,
কত সন্তান প্রাণ দেয় স্বাধীনতার ছবি এঁকে,
নতুন জমাদার বলে ঊর্দূ বল,নয় গলা টিপে ধরে,
ওরা জানতোনা কত বিদ্রোহ এ মনের ঘরে ।

আসে কত সূর্য সন্তান,আসে মুজিবর,
রক্তস্নানে শাদী হয়ে আসে নব বর,
কোথায় তোমার ঘর বুড়ী ? কোথায় তোমার দেশ ?
বুড়ীর চিন্তাস্রোত ভেঙ্গে যায়,দীর্ঘশ্বাস ফেলে-বাংলাদেশ ।


লেখক-শাহারীয়ার ওয়াহেদ
গর্জনিয়া,রামু,কক্সবাজার।
  

Sunday, 15 September 2013

ষড় ঋতুর দেশ

গ্রীষ্মকালে খাঁ খাঁ করা রৌদ্র মাথার উপর,
রৌদ্র ঝরে কাটাফাটা রৌদ্রতাপে দুপুর,
কাল বোশাখী ঝাপ্টা মারে লক্ষ মুকুল ঝরে,
বৈশাখ মাসে আম-কাঁঠালে বাগান গেছে ভ্রে ।

বর্ষাকালে কাল্মেঘে নিভে সূর্য দৃষ্টি,
ঝর-ঝর-ঝর, ঝর-ঝর-ঝর, রাতে দিনে বৃষ্টি,
আষাঢ়-শ্রাবণ জলের ধারা জমে জমে  বান,
বানের জলে পলল ফেলে কৃষক ভাইয়ের গান ।

শরৎকালে অল্প ঠান্ডা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি,
কাশফুল আর চন্দ্রতারায় রাতের আকাশ মিষ্টি,
আকাশ জুড়ে ঠান্ডা আমেজ সাদা মেঘের ভেলা,
ভাদ্র-আশ্বিন ঘুরে বেড়ায় হঠাৎ বৃষ্টির খেলা ।

হেমন্ত কালে সোনার ধানে সারা বাংলা ভরা,
মনের রঙ্গে , খুশীর ঢঙ্গে , কৃষক ভাইয়ের ধরা,
বুক বাধেঁ কৃষক ভাইয়া গাহে নব গান,
অগ্রাহণে কৃষক ভাইয়া কাটে সোনার ধান ।

শিতকালে সারা বাংলা কুয়াশায় যায় ভরে,
শীতের পিঠা, খেজুর মিঠা, বানায় ঘরে ঘরে,
ভোরের রবি ঘুমিয়ে পড়ে কুয়াশা লেপে মুড়ি,
খড়-বিছালী জ্বেলে বুড়ো ভাগায় হীম্বুড়ি ।

বসন্তকালে আগুন লাগে সারা বাংলাময়,
ফুলে ফলে ভরে ভরে কোকিল ডাকের জয়,
সবুজ-শ্যামল, রং-বেরং, নেইকো রুপের শেষ,
এ আমার জন্মভূমি ষড় ঋতুর দেশ ।


লেখক- শাহারীয়ার ওয়াহেদ
গর্জনিয়া,রামু,কক্সবাজার।



















Sunday, 1 September 2013

বিপর্যস্ত স্বাধীনতা

                                                           কু-শিক্ষায়, কু-শিল্পে দূর্ণীতি বাড়ে
                                                         দিন দিন ঋণের বোঝা এসে পড়ে ঘাডেঁ  ।
                                                           ভুল নেতার কথায় যুবক সব সন্ত্রাস,
                                                           জন-বিস্ফোরণে ধানী জমি হয় হ্রাস ।
                                                               নকল দখল করে পরীক্ষায় পাস,
                                                        ভুল শিক্ষার অহমিকায় জমি দেয়না চাষ ।
                                                           নেশা টানা পেশা আজ,যত মিথ্যা কথা,
                                                        সীমান্ত নিয়ে টানা ছিড়া,বিপর্যস্ত স্বাধীনতা ।
                                                             ঘূর্ণিঝড়ে পড়ে যায় সব বটগাছ ,
                                                           পোড়াতেলে মরে যায় শতশত মাছ ।
                                                            মাছে-ভাতে বাঙ্গালী আজ গল্পকথা,
                                                          দিন দিন বেড়ে চলছে বাংলার ব্যাথা ।
                                                          হে নবীন এসো একটা বটগাছ রোপে দাও,
                                                             বুকবাঁধ দেশপ্রেমে, এ বাংলাকে বাঁচাও



লেখক-শাহারীয়ার ওয়াহেদ
গর্জনিয়া,রামু,কক্সবাজার।

Friday, 26 July 2013

সংস্কৃতির ছড়া

শুকনো মরিচ পান্তাভাত
নববর্ষে অপূর্ব স্বাদ,
কোর্তা আর হলুদ শাড়ী
আনন্দ হয় বাড়ী বাড়ী ।

                                       নারিকেল,চিনি,বিন্নি ভাতে
                                       মিশিয়ে নিয়ে এক সাথে,
                                      মরিচ চাটনী অল্প তাতে
                                      ঝাল না হয় বেশী যাতে ।


গ্রামীণ চ্যাকের রঙ্গিন শাড়ী
বাশেঁর,ছনের,ছোট্ট বাড়ী,
নাকের নোলক কানের দুল
গ্রাম্য পিরীত নানান ফুল ।

                                     কলসী নিয়ে গ্রামের বধু,
                                     ঝোপের ভেতর পোকার মধু
                                     নদীর ঘাটে সুরের বাশিঁ,
                                    কৃষক ভাইয়ের মাঠের হাসি ।

পূজো,ঈদ,বড়দিন
ভাষা সৈনিকদের প্রেমের ঋণ,
মুক্তিযোদ্ধার প্রাণের ভিৎ
বাংলা স্মৃতি লক্ষ শহীদ ।

                                          বাংলা জুড়ে সারা বছর
                                          সবুজ-শ্যামল হাজার ছবি
                                          পশ্চিম পাড়ার রশিদ দাদা
                                           দার্শনিক আর অল্প কবি ।

লালনগীতি ভাটিয়ালী শোন
হিন্দি-উর্দূ দূর দূর,
কত আছে ভাব-ভাউল
বাংলা ই আমার মধুর সুর ।

                                        বারমাসে তের পার্বণ
                                        ধর্ম-কর্ম হাজার রীতি
                                     বিদেশ হতে ধার নিওনা
                                     এসব মোদের সংস্কৃতি ।

লেখক-শাহারীয়ার ওয়াহেদ
গর্জনিয়া,রামু,কক্সবাজার।

              

Thursday, 25 July 2013

বাংলা

ঝিলের জলে শাপলা তোলে ছোট্ট কচি বালক,
ঝিলের জলে সাদা বকের ফেলে যাওয়া পালক।
বিল জুড়ে সব সোনালী ধান,কৃষক ভাইয়ের গান,
বিলের শেষে ছোট্ট কুঠির,কাক তাড়ুয়ার ভান।

প্রান্ত জুড়ে সবুজ-শ্যামল,সবুজ সব ছবি,
প্রান্ত জুড়ে রং ছড়িয়ে উঠছে পূবে রবি।

নদীর মাঝে রুপালী জল,স্রোতে জলের নাচ,
নদীর বুকে বেলে মাটি,জালে রুপোর মাছ।

আকাশ জুড়ে নীলের মাঝে সাদা মেঘের ভেলা,
আকাশ জুড়ে ঘুরে ঘুরে হরেক পাখির খেলা।

খালের পাড়ে ছোট্ট গ্রাম,ছোট্ট একটা বাজার,
খালের পাড়ে পাহাড় ঘেষে পীর-অলীদের মাজার।

পাড়ায় পাড়ায় একটা মসজিদ,পান-সুপারী-ছোরতা,
পাড়ার বুড়ো পান চিবিয়ে গায়ে লুঙ্গি কোর্তা।

দেশ জুড়ে সব সুরের মালা,স্বাধীনতার স্মৃতি,
দেশ জুড়ে সব ধর্ম-কর্ম, বহু প্রাচীন কীর্তি।
ছবির মত দেশটি  আমার,হেথায় হোথায় জংলা,
ছবির দেশ কবির দেশ এ আমরি বাংলা।

Thursday, 4 July 2013

একটি দোয়েল


একটি দোয়েল কিচ কিচ শব্দ তুলে,
এগাছ ওগাছ ঢালে ঢালে,
সাদা-কালো পাখনাগুলো,
ভালবাসার কথা বলে।

                         একটি দোয়েলের দিকে হাজার রাইফেল তাক।
                              কেটেকুটে শতভাগ,
                              শত শত লোভীর ভীড়ে,
                          কলিজাটা নিচ্ছে ছিঁড়ে।

একটি দোয়েল বাংলাদেশে,
হাটে, মাঠে, নদীর ঘাটে,
উড়ছে যত স্বাধীন পথে,
গণতন্ত্র মুক্তি পেতে,নানা মুনীর নানা মতে।